
চাইকোভস্কি কনজারভেটরির ‘রাইজিং স্টারস’-এর মোহনীয় পরিবেশনা
মস্কোর চাইকোভস্কি রাষ্ট্রীয় সঙ্গীত বিদ্যালয় থেকে আগত উদীয়মান প্রতিভাবান সঙ্গীতশিল্পীরা অংশগ্রহপণে ঢাকার রাশিয়ান হাউজের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় “রাইজিং স্টারস” শিরোনামের মনোমুগ্ধকর সঙ্গীত সন্ধ্যা।
৪ মে ২০২৫-এ অনুষ্ঠিত এই আয়োজনের আগে বাংলাদেশের শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত প্রথম সঙ্গীতানুষ্ঠানের অভাবনীয় সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ঢাকার শ্রোতারা উপভোগ করেন আরেকটি হৃদয়ছোঁয়া সাংস্কৃতিক আয়োজন।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় রাশিয়ান হাউজ ইন ঢাকার পরিচালক পাভেল দভোইচেনকভ-এর আন্তরিক শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে। পরিচালক তার বক্তব্যে আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উদ্যোগের তাৎপর্য এবং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উপর আলোকপাত করেন।
স্তানিস্লাভ চেরনুখিন (পিয়ানোবাদক), কারিনা খোভালুগ (সোপ্রানো) এবং মিখাইল লগিনভ (বারিটোন) সঙ্গীত ও সংস্কৃতিক সন্ধ্যাটি পরিবেশন করেন। তাঁদের পরিবেশনায় ছিল রাশিয়ান এবং ইউরোপীয় ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীতের এক বৈচিত্র্যময় সুরের মূর্ছনা, যা শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যায়। বিশেষ করে রাখমানিনভের গভীর এবং আবেগপূর্ণ সুর, চাইকোভস্কি ও রিমস্কি-কোরসাকভের নাটকীয় অপেরা আরিয়া এবং দেশপ্রেমমূলক গানসমূহ উপস্থিত শ্রোতাদের আবেগাপ্লুত করে তোলে। ‘স্মুগলিয়ানকা’ এবং ‘ইভনিং অ্যাট দ্য রেইড’ পরিবেশনার সময় শ্রোতারা দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।
এই ব্যতিক্রমী সন্ধ্যা ছিল “রাইজিং স্টারস” সাংস্কৃতিক উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার মূল লক্ষ্য হল বিশ্ববাসীর সামনে রাশিয়ার নতুন প্রজন্মের সঙ্গীতশিল্পীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং রাশিয়ান ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি উজ্জ্বল নিদর্শন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ান দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্টজন, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, সোভিয়েত/রাশিয়ান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশে অবস্থানরত রাশিয়ান নাগরিক এবং বিপুল সংখ্যক সঙ্গীতপ্রেমী শ্রোতা। তাঁদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং প্রতিক্রিয়া দু’দেশের বন্ধুত্বের স্থায়িত্ব ও আন্তরিকতার পরিচায়ক।
সঙ্গীত এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় কেবল মনোরঞ্জনের মাধ্যম নয়, বরং পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে এক অমূল্য সম্পদ। এই অনুষ্ঠান তার প্রমাণ বহন করে আবারও তুলে ধরেছে, সুরের শক্তি কতটা গভীর ও বিস্তৃত হতে পারে।
ভ্রমণডেস্ক
মস্কোর চাইকোভস্কি রাষ্ট্রীয় সঙ্গীত বিদ্যালয়ের প্রতিভাবান শিল্পীদের পরিবেশনা সত্যিই অসাধারণ ছিল। এই অনুষ্ঠানটি শুধু সঙ্গীতপ্রেমীদের জন্য নয়, বরং দুই দেশের সাংস্কৃতিক বন্ধুত্বেরও একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। রাখমানিনভ, চাইকোভস্কি এবং রিমস্কি-কোরসাকভের সুরগুলি শ্রোতাদের হৃদয় স্পর্শ করেছে। বিশেষ করে ‘স্মুগলিয়ানকা’ এবং ‘ইভনিং অ্যাট দ্য রেইড’ পরিবেশনার সময়ের করতালি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল। এই ধরনের আয়োজন কি ভবিষ্যতে আরও হবে? আমি মনে করি, এই ধরনের সাংস্কৃতিক বিনিময় শুধু সঙ্গীত নয়, বরং দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া ও সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করে। আপনার কি মনে হয়, এই অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশে রাশিয়ান সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সাহায্য করবে?