ফ্রাঁসোয়া গ্রোজিন
পরিচালক, আলিয়ঁস ফ্রসেজ দ্য ঢাকা

আমি সত্যিই খুব আনন্দিত ট্রাভেল ম্যাগাজিন ভ্রমণ বরাবরের মতো এবারও ফ্রান্স, ফরাসি ভাষা এবং সংস্কৃতিকে উপজীব্য করে ফ্রান্সের জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ফ্রান্সের পর্যটনকে তুলে ধরার চমৎকার এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, ভ্রমণ ম্যাগাজিনের এই উদ্যোগকে আমি উষ্ণ অভিনন্দন জানাচ্ছি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিগত বছরগুলোতে ফরাসি ভাষাকে কেন্দ্র করে বিশ্বময় আয়োজিত ফ্রাঙ্কোফনি উৎসবের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে আলিয়ঁস ফ্রসেজ-এর উদ্যোগে ফ্রাঙ্কোফোন সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতায় ঢাকায় যে সপ্তাহব্যাপি উৎসব উদযাপন আয়োজন হয়ে থাকে সেই অনুষ্ঠানমালায়ও ভ্রমণ ম্যাগাজিন বিশেষ প্রকাশনাসহ নানা আয়োজনে আলিয়ঁস ফ্রসেজ এর এক উল্লেখযোগ্য অংশীদাররূপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে, যা সংশ্লিষ্ট সকল মহলে প্রশংসিত।
প্রকৃতপক্ষে ৫টি মহাদেশে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ ফরাসি ভাষায় কথা বলেন, ফ্রাঙ্কোফোনি হলো ফরাসি ভাষাভাষি কোটি মানুষের ‘ভাষার উৎসব’। প্রতি বছর ২০শে মার্চ, সারা বিশ্বে ফ্রাঙ্কোফোনি উৎসব উদযাপিত হয়।
আজ আমরা যে বাস্তুতন্ত্রে বাস করি তা একটি বৈশ্বিক স্থান। আমাদের জীবনযাপন এবং সংশ্লিষ্টতা নিছক কোনো ‘ভার্টিকাল’ বিষয় নয়, বরং একই দেশ, একই অঞ্চল, একই গ্রাম এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলন, রুচি, কোনও কিছু নিশ্চিত করার জন্য তথ্যের উৎসের ব্যবহার- রেফারেন্স কিংবা ভাষার এমন শক্তি যা অন্যান্য সংস্কৃতিতে ছাপ ফেলতে সক্ষম, অর্থাৎ গোটা বিষয়টিকে এক শব্দে বলতে গেলে এটি ‘হরিজন্টাল’।

ফ্রাঙ্কোফোনি হলো এমন মানসিক অবস্থা যেখানে ব্যক্তি একটি সমষ্টিগত শক্তিময় স্থান উদ্ভাবন করতে পারে যা হল ভিন্নতা, অনুবাদ, দ্বিভাষিকতা, ভাষা সৃষ্টি, দুটি ভাষার সংস্পর্শ থেকে সৃষ্ট ভাষা বা উচ্চারণ এবং স্বরবিন্যাসের এই চাহিদার প্রকাশ এবং বাস্তবতা। এটি আমাদের মধ্যকার পার্থক্যগুলো বোঝা এবং পরস্পরের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়ার একটি হাতিয়ার হয়ে ওঠে।
আমরা ভাষার এই অভিব্যক্তি দিয়ে নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা এবং সংহতিকে শুধু সুসংহতই নয়, বরং নতুন নতুনরূপে আবিস্কার করি। এখানে উল্লেখ করতে হয় কেবল সীমানারেখা আমাদের আঞ্চলিক পরিচয়ের নিশ্চয়তা দিতে পারেনা; বরং ভাষা আমাদেরকে বহু রূপে, বহু রঙে রাঙিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে তাৎপর্যপূণভাবে সাহায্য করে।
ফ্রাঙ্কোফোনি উৎসবের লক্ষ্য হলো এটি ফরাসি ভাষাভাষী বিশ্বের কাছে ভাষার বহুমাত্রিকতাকে তুলে ধরে এবং এর মাধ্যমে সামগ্রিক বিবেচনায় বাংলাদেশের কাছেও উন্মুক্ত করা। ঢাকায় এই উৎসবের আয়োজনের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে উন্নত ও বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিক বিস্তারের ক্ষেত্রে ফ্রাঙ্কোফোনি নিসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।