আলজেরিয়া দূতাবাসে উদযাপিত হলো ‘জাতীয় মুজাহিদ দিবস’

দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান এবং চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স মিসেস বাসমা বেনতালেবের বিশেষ বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে জাতীয় মুজাহিদ দিবস উদযাপন করেছে ঢাকাস্থ আলজেরিয়া দূতাবাস।

বাংলাদেশে অবস্থিত গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র আলজেরিয়ার দূতাবাস ঢাকায় তাদের দূতাবাস প্রাঙ্গণে আলজেরিয়ার জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জাতীয় মুজাহিদ দিবস’ উদযাপন করেছে। দূতাবাসের কূটনীতিক ও কর্মী, বিশিষ্ট অতিথি, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমের সদস্য এবং বাংলাদেশের সুশীল সমাজের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার দ্বৈত বার্ষিকী হচ্ছে ২০ আগস্ট ১৯৫৫ এবং ১৯৫৬।

১৯৫৫ সালের ২০ আগস্ট ‘উত্তর কনস্টানটাইন আক্রমণ’ এবং ১৯৫৬ সালের ২০ আগস্ট ‘সৌম্মাম সম্মেলন’। দিনটিকে স্মরণ করে এই উপলক্ষ্যে আজ ২০ আগস্ট দূতাবাস প্রাঙ্গণে আলজেরিয়ার জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূত্রপাত হয়। আলজেরিয়ার ইতিহাসের মহান শহীদ বীরদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ঢাকাস্থ আলজেরিয়া দূতাবাসের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স মিসেস বাসমা বেনতালেব ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আলজেরীয় জনগণের বীরত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা এবং আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার আনুষ্ঠানিক বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি এই দিনের ঐতিহাসিক তাৎপর্যের বিষয়টি তুলে ধরেন, যেখানে আলজেরিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে ‘প্রতিরোধ, ঐক্য এবং দূরদৃষ্টি’র এক অনন্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ২০ আগস্ট ১৯৫৫ এবং ২০ আগস্ট ১৯৫৬ এর ঘটনাগুলো আলজেরিয়ার বিপ্লবের ইতিহাসে অবিস্মরণীয়ভাবে খোদাই করা আছে। প্রকৃতপক্ষে সেগুলো দেশটির স্বাধীনতার দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভের প্রতিনিধিত্ব করে, যথাক্রমে যাকে উপস্থাপন করা হয় ‘ত্যাগ এবং প্রতিরোধ’রূপে কনস্টানটাইনের রক্তে মূর্ত, এবং ‘সংগঠন এবং দূরদৃষ্টি’রূপে আবির্ভূত হয়েছিল সৌম্মাম সম্মেলন।

তিনি কনস্টানটাইন বিদ্রোহের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ঔপনিবেশিক বর্বরতার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, এরফলে আলজেরীয়বাসিকে মর্মান্তিক ক্ষতি-শিকার এবং চরম মূল্য দিতে হয়েছিলো, তবে শেষপর্যন্ত এটি আলজেরিয়ার সংকল্পকে শক্তিশালী করেছিলো। মিসেস বেনতালেব বিপ্লবের রাজনৈতিক ও সামরিক দিকনির্দেশনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে সৌম্মাম সম্মেলনের রূপান্তরমূলক ভূমিকার উপর জোর দেন, যারফলে সেইসময়ে আলজেরিয়ার অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আজ আমরা যখন মুজাহিদিনদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানাই, আমরা ‘স্বাধীনতা, ঐক্য এবং ন্যায়বিচার’-এর মূল্যবোধের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। আলজেরিয়ার এই মহান বীর শহীদগন তাদের সাহস এবং দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে আমাদের অনুপ্রাণিত করে যাবে, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে এমন একটি ভবিষ্যতের দিকে পরিচালিত করবে যেখানে এই আদর্শগুলো চিরকাল বেঁচে থাকবে।

তাৎপর্যপূর্ণ জাতীয় এই অনুষ্ঠানে যোগদানকারী সকল অতিথির প্রতি ঢাকাস্থ আলজেরিয়া দূতাবাস আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।

ভ্রমণডেস্ক

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!